তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম একে অন্যের নিত্যসঙ্গী। প্রশাসন ও মিডিয়া একে অন্যের সহযোগী, একে অন্যের হাত ধরে চলতে পারে। কোন একটি রিপোর্টের কারণে সরকার কোন মিডিয়ার উপর অসন্তুষ্ট হতে পারে কিন্তু মিডিয়ার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না। আজ বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে পিআইবি-সোহেল সামাদ স্মৃতি পুরস্কার ২০১৬ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান। পিআইবি’র মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরো অংশ নেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুুরুল আহসান বুলবুল, পিআইবি’র সহযোগী সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ, সোহেল সামাদের আত্মীয় নিলুফার করিম ও আদনান সামাদ এবং পুরস্কার বিজয়ী আরটিভি’র সিনিয়র রিপোর্টার আরাফাতুর রহমান। তথ্যমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্সের নীতি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সামরিক শাসন, যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গিবাদের জঞ্জাল মুক্ত করার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। তিনি গণমাধ্যমকে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমগুলো আগামী নির্বাচন নিয়ে রিপোর্ট করছে কিন্তু কিভাবে জঙ্গি, জঙ্গি মদতদাতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য রাখা যায় সে ব্যাপারে নীরব। জঙ্গি পুনর্বাসন নির্বাচনের লক্ষ্য হতে পারে না বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যম আজ ক্রমবিকাশমান। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনির্ভর সাংবাদিকতা যেমন সমাজের উপকার করে, তেমনি বিকৃত তথ্য ও হলুদ সাংবাদিকতা দেশের ক্ষতিসাধন করে। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সাংবাদিকরা যেমন জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে, তেমনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অপব্যবহার বন্ধের জন্যও তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে নীতিনির্ধারকদের চিন্তা-ভাবনার আহ্বান জানান। মনজুরুল আহসান বুলবুল তার বক্তব্যে বলেন, অনুসন্ধানী রিপোর্ট সাংবাদিকতার মাপকাঠিতে উঁচুমানের সাংবাদিকতা যা সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করে তোলে। তিনি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ফলোআপের উপর জোর দেন।
উল্লেখ্য, ‘রক্ত বাণিজ্য’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য জুরিবোর্ডের বিচারে আরাফাতুর রহমানকে এবারের পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদ স্মরণে একটি ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে পিআইবি প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। সোহেল সামাদের পরিবার এই ট্রাস্টের সিডমানি দাতা।