সাংবাদিক এস এ মান্নানের পুরো নাম শেখ আবদুল মান্নান। ডাকনাম লাডু। তিনি ১৯২৮ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা শেখ আব্দুল গণি। মা আঞ্জুমান আরা বেগম। এস এ মান্নান কোলকাতায় দৈনিক আজাদের সহ-সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় প্রবেশ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর দৈনিক আজাদ ঢাকা চলে এলে তিনি এই পত্রিকায় ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ‘খেলার খবর’ নামে একটি ক্রীড়া সাপ্তাহিকও প্রকাশ করেন। ব্যক্তিত্বপূণর্ চলাফেরা, মাধুর্যপূর্ণ ব্যবহার এবং মার্জিত রুচির সংস্পর্ষে যাঁরা এসেছেন তারা তাঁকে কখনো ভুলতে পারবে না। তিনি ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান অপরিসীম। খেলাধুলা ছাড়াও লাডু ভাই রাজনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিক গেমসে পূর্ব পাকিস্তানের ডেলিগেশন ম্যানেজার হিসেবে গিয়েছিলেন।
শহীদ সাংবাদিক লাডু ভাইয়ের শৈশবকাল কেটেছে কলকাতায়। প্রাথমিক শিক্ষা এখানেই শেষ হয়। ১৯৪৪ সালে কলকাতার ক্যাথোভিয়াল মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ থেকে আই .এ পাস করেন এবং ১৯৪৮ সালে একই কলেজ থেকে বি.এ পাস করেন।
ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার প্রবল আকর্ষণ ছিল। মূলত খেলাধুলার প্রতি তার নেশাই তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রীড়া সংগঠক হয়ে উঠতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে। প্রশাসনিক দায়িত্ব, দল গঠন এবং সর্বোপরি ক্রীড়া সাংবাতিকতার সব ব্যাপারে তার পারদর্শিতার কথা সকলেরই জানা। তিনি দৈনিক পাকিস্তান, সংবাদ ও অবজারভারে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজাকার বাহিনী ঢাকার পুরানা পল্টনের বাসা থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি।