সাংবাদিক নিজামুদ্দীন আহমদের জন্ম ১৯২৯ সালে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার মাওয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সিরাজুল ইসলাম এবং মা ফাতেমা বেগম। ১৯৪৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেন বিক্রমপুর ভাগ্যপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন মুন্সিগুঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে। হরগঙ্গা কলেজে ছাত্রাবস্থায় তিনি সম্পৃক্ত হন রাজনীতিতে। ১৯৬১ সালে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে নির্বাচন দিলেন। নাজিমুদ্দিন আহমদ সে নির্বাচনে অংশ নিলেন কনভেনশন মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে। পশ্চিম বিক্রমপুর থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হলেন।
৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয়দফা, ৬৯’র ছাত্রদের ১১ দফা ও গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় করাচি থেকে প্রকাশিত ‘সিভিল এন্ড মিলিটারি গেজেট’ পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি দৈনিক মিল্লাত, দৈনিক আজাদ, ঢাকা টাইমস, পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। বার্তা সংস্থা এপিপি, ইউপিআই, পিপিআই, রয়টার, এএফপি এবং বিবিসিতেও কাজ করেন নিজামুদ্দীন আহমদ। যুদ্ধ চলাকালীন ঢাকায় তখন বিদেশি গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি ছিলেন। নিজামুদ্দীন তাদের প্রতিদিনই জানাতেন গণহত্যার সবশেষ খবর। তিনি দেশের অভ্যন্তরের ঘটনা ও যুদ্ধের যাবতীয় বর্ণনা নিয়মিত বিবিসি-কে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমকে জানাতেন, যা বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
১৯৭১ সালের ১২ই ডিসেম্বর পুরানো ঢাকার ১২ নম্বর রোকনপুরের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও আলবদর বাহিনী। আর সন্ধান মেলেনি তাঁর।
# বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিক (গ্রন্থটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন)