সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল হকের জন্ম ১৯৪১ সালের ৫ই জুলাই খুলনার কান্দাপাড়া গ্রামে। বাবা শিক্ষাবিদ ও লেখক এমাদুল হক। মা সামসুন নাহার। সৈয়দ নাজমুল হক পাকিস্তান প্রেস ইন্টারন্যাশনালের চীফ রিপোর্টার ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কলম্বিয়া ব্রডকাস্টিং সার্ভিস এবং হংকং-এর এশিয়ান নিউজ এজেন্সির ঢাকা সংবাদদাতা ছিলেন। তিনি ঢাকা টাইমসের সিটি এডিটর হিসাবেও কাজ করেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি নিয়মিতভাবে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে ‘ডন’ (Dawn), ‘পাকিস্তান অবজারভার (Pakistan Observer), ‘ঢাকা টাইমস’ (The Dacca Times), ‘ওয়েভ’ (The Wave), ‘ইউনিটি’ (Unity) ইত্যাদি পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতেন । যুদ্ধ চলাকালীন নাজমুল হক তাঁর লেখনীর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন দেন এবং দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর মর্মন্তুদ অত্যাচারের কাহিনী তাঁর লেখনীর মাধম্যেই পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে বিদেশি সংবাদপত্রের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে থাকেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত হবার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৬৯ সালের অক্টোবর মাসে যখন ইউরোপ ও লন্ডন সফরে যান তখন তার একান্ত সচিব হিসেবে কেবল সৈয়দ নাজমুল হককে নিয়ে যান। শৈশবে তিনি বরিশাল জেলার মঠবাড়িয়ায় লেখাপড়া শুরু করেন এবং ঢাকা সরকারি কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে বি.এ (অনার্স), রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ১৯৬৪ সালে একই বিষয়ে এম.এ পাস করেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ব্যাচে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা লাভ করেন এবং ১৯৭০ সালে সাংবাদিকতায় আবার এম.এ ডিগ্রি নেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের র সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। নিয়মিতভাবে ঢাকা বেতার, টেলিভিশনে নাটক, কথিকা ও একাঙ্কিকায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বরে বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৬ দিন আগে আলবদর বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।